বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন কবরে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে দলীয় কার্যালয়ে ‘উপজেলা দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় পার্টি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এরশাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন কবরে। নির্বাচন কমিশনেরও কবর হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীই যেখানে বলেছেন- আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। এখন এটা গণতান্ত্রিক দেশ না বলে দিলেই হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি রক্তপাত চাইনি বলে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে ছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল আপনি ক্ষমতা ছাড়েন। লেবেল প্লেইং ফিল্ড দেয়া হবে। কিন্তু আমার সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছিল। কিন্তু আজ কি দেখছি।’
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সমস্ত প্রতিষ্ঠান এখন ধ্বংসের মুখে। নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিচার বিভাগ সব ধ্বংসের মুখে। আমরা এটা চাইনি। এটা কি গণতান্ত্রিক দেশ? গণতন্ত্র আজ নির্মূল হল। কবরে চলে গেল। এটা আমরা দেখতে চাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু পারেনি। আমরা কারও কাছ থেকে সুবিচার পাইনি। ১৯৯৬ সালে আমরা ঐক্যেমতের সরকারে ছিলাম। তারপর আমার মহাসচিবকে কেড়ে নেয়া হল। দলীয় প্রতীক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা হল। কিন্তু আমি নিঃশেষ হইনি।’
এ সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত বলেন, ‘সরকারে আছি, কি পেলাম আমরা? সুবিচার আমরা কোথাও পাইনি। মঞ্জু হত্যা মামলা চলছে, অনন্তকাল ব্যাপী চলবে। আমার মৃত্যুর পরও চলবে। তাই এবার আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো, আর কাউকে আমাদের দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে স্বৈরাচার বলা হয়। পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচার ক্ষমতা ছাড়ার পর পাঁচটি আসনে জয়ী হয়নি। আমি কোনোদিন পরাজিত হইনি। আমি মানুষের কোনো ক্ষতি করিনি, কাউকে খুন করিনি। কাউকে বাড়ি ছাড়া করিনি। তাই মানুষ আমাকে স্মরণ করবে।’
আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সামনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে সরকারের অতীতের সব অপকর্ম মানুষ ভুলে যাবে। কিন্তু আমার সন্দেহ হয়। ক্ষমতায় থাকলে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করা যায়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন সরকারের জন্য অগ্নি পরীক্ষা। নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে সরকার পাস, আর নিরপেক্ষ না হলে সরকার ফেল করবে।’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, শেখ সিরাজুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, ফখরুল ঈমাম, মীর আবদুস সবুর আসুদ প্রমুখ।